গত হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কভিডের কারণে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি থাকায় দুই মাস ব্যবসা করতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক রং উৎপাদক বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকেই কোম্পানিটির ব্যবসা গতি ফিরে পেতে শুরু করে।
সর্বশেষ চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও ভালো ব্যবসা হয়েছে কোম্পানিটির। কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ার পাশাপাশি কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে উল্লেখযোগ্য ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা। মুলত কভিডের ধাক্কা সামলে মুনাফায় চমক বার্জার পেইন্টস’র।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে বার্জার পেইন্টসের বিক্রি হয়েছে ৫২৫ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল মাত্র ২০৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৫২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির গ্রস মুনাফা হয়েছে ১৮৯ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে গ্রস মুনাফা ছিল ৭১ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির গ্রস মুনাফা বেড়েছে ১৬৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে বার্জার পেইন্টসের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৫৯৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৬ টাকা ৯ পয়সা।
যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩২ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৪৮ টাকা ৮৭ পয়সা।
ব্যবসা ও মুনাফা বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিডের জন্য গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনে কোম্পানির ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এছাড়া এ বছরের অর্থ বিলে করের পরিমাণ ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ নির্ধারণে প্রভাবেও কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে। পাশাপাশি বিক্রি বেড়ে যাওয়া ও কম পরিচালন ব্যয়ের কারণে কোম্পানির নগদ অর্থপ্রবাহ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী বলেন, কভিডের কারণে গত বছরের এ সময়ে একেবারেই ব্যবসা করতে পারেনি। সে তুলনায় এ বছর ব্যবসা ভালো ছিল। এমনকি এর আগের ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায়ও এবার আমাদের ব্যবসা ভালো হয়েছে।
এর কারণ হচ্ছে কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ার কারণে আমাদের ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। এ সময়ে আমার ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছি। সর্বোপরি কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে আমরা পরিকল্পনাগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কোম্পানির পারফরম্যান্সে।
৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বার্জার পেইন্টস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫৮ টাকা ৩ পয়সা, যা এর আগের হিসাব বছরে ছিল ৫২ টাকা ২২ পয়সা।