দীর্ঘ ১২ বছর পর বাতিল করা হচ্ছে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) আওতাভুক্ত ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট। ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা বিবেচনা করে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম (এসএমই) ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর করার লক্ষ্যে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
ওই নীতিমালার ওপর মতামত জানাতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই ও সিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি গত মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসই ও সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে প্রেরণ করেছে। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থ রক্ষার্থে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২০এ এর ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে। লেনদেন, ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট, মানি অ্যাডজাস্টমেন্ট, মার্জিন, সার্কিট ব্রেকার, ডিপোজিটরি ফি এবং চার্জ এবং অন্যান্য ছোট কোম্পানিগুলোর ট্রেডিং শুরু করার জন্য স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম,
অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড এবং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাসঙ্গিক প্ল্যাটফর্ম বা বোর্ড থেকে ওটিসি কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুত বা বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। খড়সা নীতিমালা অনুযায়ী এ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। এ চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে যদি কোনো মতামত থাকে তা জানাতে বলা হয়েছে।
২০০৯ সালে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় ওটিসি মার্কেট। মূলত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা যাচাই করে এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেওয়া,
ডিভিডেন্ড প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তি স্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটি বা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হলেও কার্যত শাস্তি পাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
জানা যায়, বর্তমানে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৬১টি ও সিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রাথমিকভাবে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে উৎপাদন ও অনুৎপাদনে থাকা মোট ২৩টি কোম্পানি স্থানান্তরিত হবে।
এর মধ্যে উৎপাদনশীল ৮টি ও অনুৎপাদনশীল ১৩টি কোম্পানি রয়েছে। এছাড়া অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ১৯টি কোম্পানিকে স্থানান্তর করা হবে। আর তালিকাচ্যুত বা এক্সিট প্ল্যানের আওতায় রয়েছে ২২টি কোম্পানি। এই বিষয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত নির্দেশনা জারি করবে বিএসইসি।