শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ তহবিল বন্ধ করার চিন্তা

0
434
HTML tutorial

২০১০ সালের শেয়ারবাজার দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য গঠিত ঋণ তহবিল বন্ধ করার চিন্তা করছে সরকার। এছাড়া ঋণখেলাপিদের পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে শেয়ারবাজারের স্বার্থে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা একটি দীর্ঘমেয়াদী তহবিল গঠনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারের পতনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার জন্য সরকার ২০১৩ সালে ৯০০ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরি করেছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) একজন যুগ্ম সচিব ড. নাহিদ হোসেন সম্প্রতি তহবিলের সুবিধাভোগীদের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। এতে শেয়ারের ট্রেডিং চালানোর জন্য তাদের নেওয়া ঋণ পরিশোধ করার জন্য পাঁচ বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সুবিধাভোগীদের মতামত চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের পক্ষে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল দীর্ঘ মেয়াদে চালানো সম্ভব নয়। এটি কোথাও থামানো উচিত। কারণ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন বৃহস্পতিবার ২,৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা ১২ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ।’

যুগ্ম সচিবের চিঠিতে সুবিধাভোগীদের কাছে এক সময় সীমা নির্ধারণের কথাও জানিয়েছিল। গত ১৭ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পাঁচ বছরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসি তহবিল অব্যাহত রাখতে চেয়েছিল। কারণ, অনেক ছোট বিনিয়োগকারী তহবিল সংকটের সম্মুখীন। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ দাবি করেছে যে তারা ৮ বছর ধরে সক্রিয় তহবিলটি কীভাবে বন্ধ করবে সে বিষয়ে দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রথমত, তারা তিন বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করার জন্য ১২টি সমান কিস্তি করেছে। দ্বিতীয়ত, তহবিলের সময়কাল পাঁচ বছরে (২০২৬) শেষ হয়ে যাবে। ১৭ আগস্টের সভাটি জুন মাসে বিএসইসি কর্তৃক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হয়। ওই চিঠিতে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোরও দাবি জানানো হয়েছে।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এই তহবিল বর্তমানে শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চিন্তার বাইরে। এটি ছোট বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করছে।’ ‘শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রয়োজন। যদি একটি স্থায়ী তহবিল গঠন করা হয়, তাহলে সে তহবিলটি শেয়ারবাজারের খারাপ সময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকার হাউসের দেওয়া তহবিল থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে বিলম্বের জন্য জরিমানার বিধান প্রবর্তন করা যেতে পারে।’

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন সভায় একটি স্থায়ী তহবিল গঠনের পক্ষে মত দেন। বিএসইসি একটি চিঠিতে বলেছে, ৯০০ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা রিকভার করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, এখানে পরিশোধের হার ১০০ ভাগ।

শেয়ারবাজারের লেনদেনের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা হিসেবে ২০১৯ সালের মে মাসে, সরকার সংগৃহীত অর্থ থেকে ৮৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার একটি ঘূর্ণমান তহবিল গঠন করে। তহবিলের মেয়াদ তিন মাস নির্ধারণ করা হয় বলে আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সভায় উল্লেখ করেন।

HTML tutorial

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here