সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভূতভাবে লভ্যাংশ প্রদানের অভিযোগ

0
302
HTML tutorial

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভূতভাবে লভ্যাংশ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছর পর্যন্ত সময়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আগে সংশ্লিষ্ট শেয়ার ধারণকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ফলে আইপিও পরবর্তী কোম্পানিটির শেয়ারধারণ করা সাধারণ শেয়ারহোল্ডার প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমন ধরনের লভ্যাংশ প্রদানের সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের বিদ্যমান বিধি বিধান লঙ্ঘন বলে মনে করছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের কার্মকাণ্ডের জন্য কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এরই ধরাবাহিকতায় সম্প্রতি আইপিও’র পূর্ব শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য বলে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দিয়েছে ডিএসই।

চিঠিতে ডিএসই উল্লেখ করেছে, গত ৭ অক্টোবর সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে পাঠানো একটি চিঠিতে আইপিও’র পূর্ব শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পুঁজিবাজারের বিদ্যমান বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে লভ্যাংশ ঘোষণা ও প্রদান করেনি। আইপিও’র পূর্ব শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়ে আপনাদের প্রদানকৃত ব্যাখ্যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এ ধরনের সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের প্রবৃদ্ধির অন্তরায় ও ক্ষতিকর।

তথ্য মতে, দেশের উভয় পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হওয়ার পর কোম্পানির পর্ষদ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কোম্পানিটির পর্ষদ সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ ও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের জন্য ২ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। একই সঙ্গে কোম্পানিটি এ সংক্রান্ত মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে (পিএসআই) প্রকাশ করে। তবে ওই পিএসআইতে গত বছরের জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ কেবল ২০২০ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বা আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ার ধারণকারীরা পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া, বাকি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ গত ৪ আগস্ট রেকর্ড ডেটের দিন শেয়ার ধারণকারী সব শেয়ারহোল্ডার পাবেন বলে জানানো হয়।

তবে তাৎক্ষণিকভাকে এ বিষয়টি শেয়ারহোল্ডারসহ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কারোই দৃষ্টিগোচর হয়নি। পরবর্তীতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পক্ষ থেকে ডিএসইর ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ঘোষিত ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ব্যাংক হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ার ধারণকারীদের ব্যাংক হিসাবে ঘোষিত লভ্যাংশের অর্থ গেলেও, সাধারণ শেয়ারহোল্ডারা কিছুই পাননি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়ে ইতিমধ্যে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি ও ডিএসই। তবে কোম্পানিটির প্রদান করা ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এদিকে বিএসইস’র নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় লভ্যাংশ সংক্রান্ত যে ঘোষণা করা হবে, তা রেকর্ড ডেটের দিন শেয়ারধারণ করা সব শেয়ারহোল্ডাররা পাবেন। এক্ষেত্রে রেকর্ড ডেটের শেয়ারহোল্ডারদের কোনো অংশকে বাদ দিয়ে লভ্যাংশ প্রদান করার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই’র প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের বিধি-বিধান যথাযথভাবে পরিপালন না করে লভ্যাংশ ঘোষণা ও প্রদান করেছে। এ বিষয়ে তাদেরকে ডিএসই চিঠি দিয়েছে। সুতরাং কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সোনালী লাইফের কোম্পানি সচিব মো. রাফি-উজ-জামান বলেন, ‘বিমা আইন অনুসরণ করে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাখ্যা প্রদান করেছি।’

HTML tutorial

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here