পুুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় থাকা আইপিও অনুমোদন পাওয়া তিনটি কোম্পানিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেয়ার বরাদ্দের অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। কিন্তু কোম্পানিগুলো তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য দিতে দেরি করছে। এতে করে কোম্পানিগুলোর লেনদেনে প্রক্রিয়াও বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিএসইসি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) মাধ্যমে আইপিওতে আসা কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেয়ার বরাদ্দের আবেদন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান সবার তালিকা ইলেকট্রনিক (টেক্স ফরমেটে আলাদ শিরোনাম ভেদে) ফরমেটে আপলোড করতে হবে। যেখানে থাকবে গ্রাহক আইডি, নাম (বিও আইডি অনুসারে), বিও আইডি, মোট অর্থের পরিমাণ, মোট শেয়ারের পরিমাণ, কর্মীদের শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। সেই সঙ্গে উল্লেখ থাকবে জাতীয় পরিচয়পত্র, কর্মচারী আইডি, চাকরিতে যোগদানের তারিখ এবং চাকুরিতে পদবী।
সিদ্ধান্তে আরও উল্লেখ করা হয়, অপরদিকে এক্সচেঞ্জগুলো কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদন (নাম, বিও আইডি, পরিমাণ, একই রকম কোনো বিষয়, ইত্যাদি) যাচাই করবে এবং বৈধ বিও আইডিগুলো ইলেকট্রনিক (টেক্সট) ফরমেটে যাচাইকরণের জন্য সিডিবিএলে পাঠাবে। সিডিবিএল আবেদনকারীদের বিও আইডিগুলো সক্রিয় আছে কি না তা যাচাই করে দেখবে।
সিডিবিএল এক্সচেঞ্জকে আবেদনকারীদের একটি আপডেটেড ডাটাবেস প্রদান করবে। যাতে বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর, নাম, ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম এবং জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য যাচাইকরণের রিপোর্ট থাকবে। কোম্পানির বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যাদের আবেদন বৈধ এবং সক্রিয় তাদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ অনুযায়ী শেয়ার দেওয়া হবে। বিএসইসি’র ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির এক কর্মকর্তা শেয়ারনিউজকে বলেন, কোম্পানিগুলোরে আইপিও শেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বরাদ্দের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএসইসি অনুমতি দেয়। কিন্ত কোম্পানিগুলো তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো তথ্য এখনও সাবমিট বা আপলোড করতে পারেনি। যার কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
তবে কোম্পানিগুলো তথ্য সাবমিট করলে, আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলোকে বাজারে লেনদেনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবো।
তিনি বলেন, যেহেতু কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেয়ার বরাদ্দের বিষয়টি এবারই প্রথম, তাই এ প্রক্রিয়াটা কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে পরবর্তীতে এ প্রক্রিয়াটা সহজ হবে। এতে করে কোম্পানিগুলো আইপিও অনুমতির পরে এত সময় লেনদেনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই’র প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী কোটায় শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার আগে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দু’টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, কোম্পানি নিজে তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিও হিসাব ও ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জে জমা দিবে। অপরটি হচ্ছে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজে এক্সচেঞ্জ সিস্টেমে জমা দিতে পারবে। সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএসইসি’র কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। তবে এখনও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত আমাদের হাতে আসেনি। বিএসইসি যে নিয়মে তথ্য যাচাইয়ের জন্য নির্দেশ দেবে সেভাবে আমরা কাজ করবো। বিএসইসির সিদ্ধান্তের পর আইপিওর জন্য যেসব কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য কোটা থাকবে তাদেরকে এ নিয়মে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, আইপিও অনুমোদন পাওয়া ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এবং বিডি থাই ফুড লিমিটেড তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ১৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য কোম্পানিগুলো বিএসইসি’র কাছে আবেদন জানিয়েছে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি কোম্পানি তিনটিকে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।