৩০ গুণ মুনাফা বেড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের

0
592
HTML tutorial

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড গত অর্থবছরে ভালো আয়ের ধারাবাহিকতা চলতি অর্থবছরেও ধরে রেখেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ গুণ বেশি আয় করতে পেরেছে।

গত জুলাই থেকে সেপ্টম্বর পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ১১ পয়সা আয় করে চমক দেখিয়েছে। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল শেয়ারপ্রতি ১৪ পয়সা। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে এই বিষয়টি জানানো হয়।

আয়ের পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদও বেড়েছে। গত জুনে অর্থবছর শেষে শেয়ারপ্রতি ৭৮ টাকা ৮৮ পয়সা সম্পদ থাকা কোম্পানিটির সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৮৩ টাকা ৪২ পয়সা।

কোম্পানিটি গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক অর্থাৎ অক্টোবর থেকেই আয় বাড়াতে থাকে। ওই বছর প্রথম প্রান্তিকে নগণ্য আয় করার পর করোনার মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে ব্যাপক আয় করে।

ওই বছর দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৭৮ পয়সা আয় হয় কোম্পানিটির। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে তৃতীয় প্রান্তিকে আয় হয় ২ টাকা ৩৮ পয়সা। আর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৩ টাকা ২৫ পয়সা।

সব মিলিয়ে অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৭ টাকা ৫৩ পয়সা আয় করে সাড়ে ৩ টাকা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। টাকার অঙ্কে এই লভ্যাংশ ৩০৬ কোটি টাকার মতো। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোনো বছরই কোম্পানিটি এত বেশি নগদ লভ্যাংশ দেয়নি।

পিপিই পার্ক ছাড়াও আরও একটি কারণে বেক্সিমকোর শেয়ার দর ক্রমেই বাড়ছে। কোম্পানিটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সি পাওয়ার দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নে একটি ২৮০ মেগাওয়াট ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নির্মিত হচ্ছে ৫৫ মেগাওয়াটের আরও একটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এর মধ্যে গাইবান্ধার কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে তিস্তা সোলার লিমিটেড আর পঞ্চগড়েরটি নির্মাণ করছে করতোয়া সোলার লিমিটেড নামে কোম্পানি। এই দুটি কোম্পানির ৭৫ শতাংশের মালিক বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সি পাওয়ার। বেক্সি পাওয়ারের ৭৫ শতাংশের মালিক আবার বেক্সিমকো লিমিটেড।

এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে উৎপাদনে আসবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থায়নের জন্য বেক্সিমকো তিন হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ছেড়েছে। এই দুটি ঘটনায় বেক্সিমকোর শেয়ার দরে উল্লম্ফনের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিতে তাদের শেয়ারের হিস্যা বাড়িয়ে চলছিলেন।

গত জুলাই মাসে মোট শেয়ারের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ হিসেবে ৪ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৬৬৮টি শেয়ার কেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আগস্টে তা আরও বাড়ে। এই মাসে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৯৫টি শেয়ার কিনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিতে তাদের মালিকানা বাড়ায় ২৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ পর্যন্ত।

জুলাই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যখন বেক্সিমকোর চার কোটির বেশি শেয়ার কেনে, তখন এর দর ছিল ৮৯ থেকে ৯২ টাকার মধ্যে। আগস্টে তারা যখন প্রায় ৭ কোটি শেয়ার কেনে, তখন এই দাম বেড়ে যায়। ৯১ টাকা থেকে ১১১ টাকা ৩০ পয়সায় গিয়ে দাঁড়ায় দর। সেপ্টেম্বরে দাম বাড়ে আরও। এই সময়ে শেয়ার দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৭ টাকা ২০ পয়সা।

তবে এই সময়টায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন শেয়ার না কিনে কিছু বিক্রি করেছে। আগের মাসের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ শেয়ার কমে এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরের মালিকানা দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ এই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯০টি শেয়ার বিক্রি করে।

তবে অক্টোবর মাসে এসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আরও ১ কোটি ২৭ লাখের মতো শেয়ার কেনে। কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মালিকানা বেড়ে এখন হয়েছে ২৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা গত জুন শেষেও ছিল ১৩ শতাংশের কিছু বেশি।

গত দেড় বছরে শেয়ারবাজারে উত্থানে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এই কোম্পানির। গত বছরের জুনে ১৩ টাকায় লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর এখন ১৮৫ টাকায়। এর মধ্যে গত চার মাসে ১১ কোটি ৬৮ লাখ ১৩ হাজার ৩০৬টি শেয়ার কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

HTML tutorial

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here