পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকিসহ নানা অনিয়মের খরব বিভিন্ন পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যাখ্যা চেয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সাইফুল ইসলাম নামে শেয়ারবাজারের এক বিনিয়োগকারী।
সাইফুল ইসলাম নামে ওই বিনিয়োগকারী সিঙ্গারের এসব ব্যবসায়িক অনিয়মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) এর সাম্প্রতিক তদন্তে বহুজাতিক কোম্পানিটির বিভিন্ন ব্যবসায়িক অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকি ধরা পড়েছে। ২০১৯ সালে সিঙ্গার বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমান মুনাফা অর্জন করেছে। কিন্তু সরকারকে প্রাপ্ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে।
মার্জ (একীভূত) হওয়া প্রতষ্ঠিানরে নামে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়া হয়। অবৈধ রেয়াত নেয়ার জন্য এই রিটার্ন জমা দেয়া হয়। কোম্পানিটি একীভূত হলেও ভ্যাট কমিশনারেটকে জানানো হয়নি।
জানা যায়, কোম্পানির সারাদেশে বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৪২৪টি। এর মধ্যে ৩১৪টি কেন্দ্রীয় নিবন্ধের বাইরে। ১৯টি ওয়্যারহাইসের একটিরও ভ্যাট নিবন্ধন নেই। ফলে নিবন্ধনহীন বিক্রয় কেন্দ্র ও ওয়্যারহাউসের ভ্যাট আত্মসাৎ করা হয়।
কোম্পানিটির বার্ষিক টার্নওভার দেড় হাজার কোটি টাকা হলেও তারা ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৩৩ কোটি টাকা। মাত্র চার মাসে প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট ফাঁকি ও অবৈধ রেয়োত নেয়া হয়েছে প্রায় ৯৪ কোটি টাকা!
দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সিঙ্গারের এসব ব্যবসায়িক অনিয়মের খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। এসব খবরে বিব্রত ও ক্ষুব্দ হয়েছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এরই প্রেক্ষিতে সাইফুল ইসলাম নামে ওই সংক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী সিঙ্গারের ব্যবসায়িক অনিয়মের বিরুদ্ধে কোম্পানিটিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদেশী কোম্পানিটি বাংলাদেশে ব্যবসা করে ভালো মুনাফা করলেও সরকারকে তার ন্যায্য রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত করছেন। সেইসঙ্গে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরও মূলধনও ঝুঁকির মুখে ফেলছে। তাই, কোম্পানিটির ব্যবসায়িক অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সিঙ্গারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিকট অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৯৯৭.০৩ মিলিয়ন টাকা। যার মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৫৭ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৪৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক উভয়ই বিদেশী নাগরিক।