পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এখনো কিছুই করতে পারিনি : বিএসইসি চেয়ারম্যান

0
181
HTML tutorial

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের আঁকার এখনও জিডিপির ২০ শতাংশের কম, অথচ অনেকেই বলে পুঁজিবাজার অভার ভ্যালুয়েড হয়ে গেছে। অথচ উন্নত রাষ্ট্রগুলোর পুঁজিবাজারের আঁকার তাদের জিডিপির ১০০ শতাংশের সমান। সে হিসেবে আমরা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এখনো কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু তারপরেও স্টেকহোল্ডাররা যেভাবে প্রশংসা করেন, তাতে সত্যিই ধন্য হয়ে যাই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএসজেএফ) নিজস্ব অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন, বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও ড. মিজানুর রহমান, ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল ও সঞ্চালনা করেন সাধারন সম্পাদক মনির হোসেন।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, কতলোক বলে মার্কেট অনেক বড় ও অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে। এসব বিষয়গুলো মোকাবেলা করতে হবে। যা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না। এক্ষেত্রে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, নিজের বাসা বা ঠিকানা যে কি পরিমাণ প্রয়োজন, তা আমরা সবাই বুঝি। যারা নিজেদের বাসায় থাকি, তারা নিজেদেরকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আসলে কোনকিছুই স্থায়ী ঠিকানা ছাড়া ভালোভাবে করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, বিএসইসির বিদ্যমান জনবল দিয়ে ১১শত প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করা খুবই কঠিন। আমাদেরকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তাই ক্যাপিটাল মার্কেট বিটের সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইস্যুতে সঠিক তথ্য তুলে আনতে বলেন তিনি। যা কমিশনের কাজকে সহজ ও দ্রুত করে তুলবে।

যেসব ব্যবসায়ীদের পত্রিকা রয়েছে, তাদেরকে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা বা প্রভাবিত করতে গিয়ে ভুল নিউজ সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমরা কিন্তু নিউজ দেখলেই বুঝি কেনো বা কি স্বার্থে করা হয়েছে। আমরা সত্য সংবাদ দেখতে চাই। নিজের ব্যবসার সুবিধার জন্য অন্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন সংবাদ চাই না। এ জাতীয় বিষয়গুলো সিএমজেএফকে প্রতিরোধ করার আহ্বান করেন তিনি।

বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, বিএসইসির কমিশনার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে একটা বিষয় লক্ষ করেছি ক্যাপিটাল মার্কেটে যারা সাংবাদিক আছেন তারা বিপুল এবং অপরিসীম দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এজন্য তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই এবং বর্তমানে এই স্থায়ী ঠিকানায় থেকে সেই দায়িত্ব আরো গুরুত্বসহ পালন করবে বলে আমি আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি যেন বিদেশি বিনিয়োগও আসে সেজন্য আমরা সবাই কাজ করছি। বর্তমান সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কাজ করছেন। আমরা চাই সাংবাদিক হিসেবে আপনারাও আপনাদের জায়গা থেকে কাজ করবেন।

বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি উদিয়মান অর্থনীতির দেশ। আমাদের প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়ন আজকে গ্লোবাল ইকোনমিতে অগ্রসর। ১৯৭২ সালে আমাদের স্বাধীনতার পর পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের এ দেশে অর্থনীতির আকার ছিলো মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার, আজকে যা ৩৫০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের অর্থনীতির যে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিকে উন্নয়নের অগ্রগতি হয়েছে, সে তুলনায় একটি জায়গায় বেমানান তা হলো ক্যাপিটাল মার্কেট। গত বছর যখন আমরা কাজ শুরু করি তখন ক্যাপিটাল মার্কেটের ক্যাপিটালাইজেশন ছিলো আমাদের জিডিপির ১২ শতাংশ, যা বর্তমানে কিছুটা বেড়েছে তবে তাও ২০ শতাংশের কম। অথচ আমাদের পাশবর্তী দেশে তা মোট জিডিপির ১০০ শতাংশ। তাই আমাদের দেখতে হবে কতটা পিছিয়ে আছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্যাপিটাল মার্কেট বৃদ্ধির যে সম্ভবনা রয়েছে, সেটা কাজে লাগাতে আমাদের দুই বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তার মধ্যে একটি ডায়নামিক হতে হবে এবং ইনভেস্টরের সিকিউরিটি দিতে হবে। আমরা যদি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে চাই তাহলে স্বচ্চতার বিকল্প নেই। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরাম সেই স্বচ্চতা আনায়ণে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করছি।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘দেশে অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে যারা এখনও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। দেশে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে কিন্ত পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। তাদের পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে হবে।

পুঁজিবাজারে সেসব কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আসতে কর সুবিধা দিতে হবে। তাতে সরকারের লোকসান নেই। বরং সরকার অন্য কোনো না কোনো পন্থা থেকে তার চেয়ে বেশি লাভবান হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- ই-জেনারেশনের চেয়ারম্যান শামীম আহসান, বাংলাদেশ একাডেমি ফর ক্যাপিটাল মার্কেটের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের পরিচালক খায়রুল আনাম চৌধুরী, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল হক, বিএসইসির নির্বাহী সাইফুর রহমান, আবেদ হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু খালিদ মো. বরকত উল্লাহ, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, এএফসি ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মজুমদার, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ,এল আর গ্লোবাল বাংলাদেশের চিফ অব স্টাফ মেহেদী হাসান, লংকা বাংলা সিকিউরিটিজের, ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী, লংকা বাংলা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাফফাত রেজা, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান, ইউসিবি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত পাশা, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক আহমেদ রশীদ লালী।

HTML tutorial

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here