পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আনোয়ার গালভানাইজিংয়ের শেয়ারদর ফের লাগামহীনভাবে বাড়ছে। ১২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪৮ টাকা থেকে বেড়ে ৪৩০ টাকায় উঠেছে। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সম্পদমূল্যের ২৩.৩২ গুণ দরে লেনদেন হচ্ছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ৩৪৮ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। যা সর্বশেষ ৪৩০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮২ টাকা বা ১৯ শতাংশের বেশি। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ শেয়ারদর বৃ্দ্ধির পেছনে কোন সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে জানিয়েছে।
গত এক মাসের দর চিত্র
এর আগে গত বছর ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৯৪ টাকা ৪০ পয়সা। সাড়ে ৮ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর ৩৩৫ টাকা ৭০ পয়সা। তারও আগে গত ২০২০ সালে ১৮ মার্চ কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার দর ছিল ৫৭ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক বছর ১০ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৩৭২ টাকা ৩০ পয়সা বা ৬.৪৪ গুণ।
গত দুই বছরের দর চিত্র

গত বছর ৯ আগস্ট আনোয়ার গ্যালভেনাইজিংয়ের অস্বাভাবিক শেয়ারদর খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত গঠন করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু তারপর কিছুদিন শেয়ারটির দর থেমে ছিল। এরপর ফের লাগামহীন হয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। কয়েক বিনিয়োগকারী শেয়ারনিউজকে জানান, একটি তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানির চেয়ারম্যান কোম্পানিটির পেছনে কলকাঠী নাড়াচ্ছেন। যার কারণে কোন কারণ ছাড়াই কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে, আবার কমছে।
১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির আনোয়ার গ্যালভেনাইজিংয়ের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ২০ কোটি টাকা ও ১৫ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ মাত্র ৫৪ লাখ টাকা। বার্ষিক নিরীক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির পিই রেশিও ২১১.৮৭ পয়েন্ট। আর অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী পিই রেশিও ২০.৯৬।
কোম্পানিটির এক কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৩৫.৩২ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালক, ২১.৪৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৪৩.২৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
কোম্পানিটি ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড, ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড এবং ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০২০ সালে ১০ শতাংশ স্টক ও ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
সর্বশেষ প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ৫ টাকা ১৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮৯ পয়সা। অস্বাভাবিক এই ইপিএস হওয়ার কারণ হিসাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, নন-অপারেশন আয় বাড়ার কারণেই ইপিএসে এতো বড় পরিবর্তন হয়েছে।
ট্রেডার বাংলাদেশ, ১৫ জানুয়ারি ২০২২